প্রেক্ষিত ও যাপিত যা কিছু সবই কবিতার ।। ফরিদ ভূঁঁইয়া

 
ফরিদ ভূঁঁইয়া’র কবিতা ভাবনা

একটা অজানা অস্পষ্টতা আমার কাছে স্পষ্ট হয়ে ওঠে ওঠে, ওঠে না-এ এক ভালোলাগা, এ এক বেদনা; এখানেই আমার কবিতা আরাধনা! 

অনেক বিষয়-আশয় চারপাশ ঘিরে বোধনের ঘণ্টা বাজায়। প্রেক্ষিত ও যাপিত যা-কিছু সবই কবিতার, কবিতাকলা আমাকে যুক্ত করে, মুগ্ধ করে অবলিলায় প্রেমে ও অপ্রেমে, জীবনের প্রয়োজনে, হেলায় অথবা সমাদরে, মানবিক আদান-প্রদানে অথবা যেকোনো ছুতায়। 

মানুষ সত্য, সত্য বেঁচে থাকা-শ্বাস-প্রশ্বাস। সত্য যত প্রাপ্তিযোগ, অপ্রাপ্তি, বঞ্চনা। মানুষের পাশাপাশি কত প্রাণ অথবা প্রাণহীন জড়; কিছুই ফেলনা নয়-সবখানেই কবিতার অনুভব। এইযে চাঁদ, সূরুজ, গ্রহ, গ্রহাণুপুঞ্জ রহস্যঘেরা নভমন্ডল... 

ফুল, পাখি, প্রজাপতি, বিস্তৃৃত মাঠ, দূরের পাহাড়, সাগর-নদী, মৃদুমন্দ বাতাসের কানাকানি, দূর ভাবনায় দোলায়িত ক্ষণ, মুহুর্ত, হর-রাত-দিন, জিজ্ঞাসা, জিজ্ঞাসার উত্তর, অপার সৃষ্টির বিস্তার-অবচেতনে স্রষ্টাতে বিশ্বাস। কবিস্রষ্টা কবিতায় মশগুল বিশ্বাসের নিজ বলয়ে অথবা দিগদিগন্ত অবিশ্বাসে প্রশ্নের দশ আনন...

কোথাও স্বস্তি মিলে না আমার। একটি শব্দ ঠোঁটের ফাঁক গলে বেরুনোর পর আর আগের আমিতো বিস্তর ফারাকে এ বুঝি, উচ্চারিত শব্দের ঋণ। কলম অথবা বাটন হতে সংঘটিত শব্দের মুর্ত হয়ে কবি তার কবিতায় জন্মকালের যাপন উদযাপন নিমিত্ত মাত্র; হতে চায়, হয়ে যাক মহাকালের। 

শৈশব, কৈশোর থেকে সময়ের মাদুলি গলে পরে হেঁটে চলেছি যৌবন তাড়িত আমৃত্যু। কবির শৈশব, কৈশোর ও যৌবনই থাকে, বার্ধক্য থাকে না-এ কথা সবারি জানা। কবির সাধনা কাল আমৃত্যু হলে, মৃত্যুকে মেনে নিলে তবে সে কেমনে হবে মহাকালের? প্রশ্নের গোলক স্নায়ুর সবরেখা ছুঁঁয়ে ছুঁঁয়ে দিশেহারা হলে মন নশ্বর পৃথিবীর গল্প বলে। 

পাওয়া না পাওয়ার খামোখা এতসব-যুদ্ধ ও জয়-পরাজয়। মানবিক হলে পর প্রাণের গভীরে বাস করে অপরাপর প্রাণের প্রতিনিধি। বিপুল ত্রুটির এক জীবন মানে বস্তুগত-অবস্তুগত তত্ত্বে তথ্যে লড়াই। স্বার্থ ও সংঘাত শেষে নিকেষের ঘরে কবি একা প্রাচুর্যের মহাপ্রাণ অনন্য মহান পরমের অনুধ্যান।
স্বপ্নরা এভাবে দানা বাঁধুক, অক্ষরের স্বর অজস্র পৃথিবীর অনুবাদ হোক।

No comments

Powered by Blogger.