জীবনে জীবন যোগ করতে হয় নইলে কৃত্রিম পণ্যে ব্যর্থ হয় জীবনের পসরা ।। আল মাহমুদ

 

জীবনে জীবন যোগ করতে হয় নইলে কৃত্রিম পণ্যে ব্যর্থ হয় জীবনের পসরা
আল মাহমুদ
 
দীর্ঘ দিন যাবত কবি আল মাহমুদের কথামালা প্রশ্ন পাল্টা প্রশ্ন নিয়ে তৈরি হয়েছে এই লেখাটি। আমি কবি আল মাহমুদের সাথে পরিচিত হই ১৯৯৭ সালে। তখন থেকেই তার সাথে তৈরি হয় একটি ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। এর পরপরই বাংলাদেশ সংস্কৃতিকেন্দ্রে চাকুরীর সুবাদে মাহমুদ ভাইয়ের সাথে সম্পর্কটি আরো পাকাপোক্ত হয়। কবি মতিউর রহমান মল্লিক ভাই এই সম্পর্ক গাঢ় থেকে গাঢ়তর করার অগ্রণী ভ‚মিকা রাখে। কিছুদিন তার কবিতা ও গদ্যের অনুলিখনেও সহযোগিতা করেছি। এই সময়গুলোতে মাহমুদ ভাইয়ের সাথে আমার অনেক কথাই হয়। সেই সব কথাগুলোকে একত্র করাই এই সাক্ষাৎকারের মূল উদ্যেশ্য।
মাহমুদ ভাইয়ের কাব্য ভাবনা আর তার ব্যাক্তিগত জীবন রাজনৈতিক জীবন সব মিলিয়ে এক ও অভিন্ন। তিনি জীবনে যা ভেবেছেন তাই করতে চেষ্টা করছেন। এই কথাগুলোতে অন্যরকম একটি স্বাদ অনুভব করবেন। অনেকেই এগুলোকে ভিন্ন চোখে দেখেন। কেউ কেউ ভাবতে পারেন এগুলোকে কেনো উঠিয়ে আনা হয়েছে। সাক্ষাৎকারে তো কিছু চিন্তাশীল বিষয় থাকবে এর বাইয়ে কিছু থাকে পারে না। আমি তার থেকে বাইয়ে এসে কথাগুলোকে উপস্থাপন করাতে চেয়েছি মাহমুদ ভাইয়ের মাধ্যেমে। এটা তেমন কোনো বিষয় না। বাংলা সাহিত্যে এক মাত্র সৃজনশীল মানুষ মাহমুদ ভাই যে কি না সবচেয়ে বেশি সাক্ষাৎকার প্রদানকারী হিসেবে জয়ের মালাটি পরিধান করে আছেন। আমার এই সাক্ষাৎকারটি সেই ছিলছিলার একটি অংশ হবে থাকবে বলে আশা করি। -আফসার নিজাম
 
এই সাক্ষাৎকারটি ‘সাময়িকী’র অনলাইন ভার্সনের ২০১৫ সালে প্রকাশিত হয়।
 
কবি ও কবিতা সম্পর্কে কবির বয়ান
 
কবি ও কবিতা প্রেম-প্রকৃতি দেশ ও মানুষ জন্য
কবিতা মানুষকে সুন্দর করে। কবিতা মানুষকে আত্ম-বিশ্বাসে বলিয়ান করে। কবিতা মানুষকে স্বাধীনতা দান করে। মানুষের মধ্যে যে স্বাধীনতা চেতনা, যে সার্বভৌমত্ব চেতনা- আমি স্বাধীনতা, আমি সার্বভৌম, মানুষের মাঝে এই চেতনা, এই যে অনুভূতি, যাঁরা কাব্য করেন, যাঁরা কবিতা লেখেন তাঁরাই এই চেতনাকে বর্ধিত করেন। উদ্ভাধন করেন দেশ প্রেমে, স্বপ্নে এবং সামনের দিকে এগুবার তাগিদে। আমাদের কবিগণ তা আজ করেছে।
 
কবিতা ও বর্তমান সময়ের কবি ও কবিতা বিষয় আপনার মতামত কি?
 
কবিতা না ভালোবাসলে মানুষের জীবনে পূর্ণতা লাভ হয় না
বাংলা ভাষা, শব্দ, চিন্তা ও দর্শন এখন অনেক আধুনিক। কিন্তু সে অর্থে আমাদের কবিতাকে যথেষ্ঠ আধুনিক বলা যাবে না। এর কারণ আমাদের কবিদেরকেই খুঁজে বের করতে হবে। প্রয়োজনে ভাষা নিয়ে গবেষণা, টিকা-টিপ্পনি লেখা, এমনকি ছন্দ কাকে বলে এ নিয়েও ভাবতে হবে। কবিতা মানুষকে সবল রাখে, তরতাজা করে। কবিতা না ভালোবাসলে মানুষের জীবনে পূর্ণতা লাভ হয় না। যারা কবিতা ভালোবাসে তারা আধুনিক মানুষ। সে অর্থে কবিরা সবচেয়ে আধুনিক। তারা কাউকে ভয় পায় না এবং কখনও পরাজিত হয় না।
 
এমন কি আছে আপনার কাছে যার জন্য আপনার কবিতা হয়ে ওঠে অন্যরকম।
 
আমার জতির জন্যে আমি স্বপ্ন সৃষ্টি করেছি
আমি স্বপ্ন সৃষ্টি করেছি আমার জতির জন্যে। তারা এই স্বপ্নের মধ্যে পরিতৃপ্তি লাভ করেছে বলে আমার বিশ্বাস। কবিতা তো অনেকেই লিখছেন আর ঈমানী কবিতার ধ্বজাটি আমার হাতে। এ-ধ্বজাটি আরো কিছুকাল এগিয়ে নিতে চাই। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন।
আমি কবি। কবির কাজ হলো মানুষকে স্বপ্ন দেখানো। আমি কাজ করেছি, স্বপ্ন দেখিয়েছি, আমার কাজের মূল্যায়ন আপনারা করবেন। আপনারা আমাকে ভালোবাসেন। আমিও আপনাদের ভালোবাসি। ভালোবাসার শক্তি হচ্ছে সবচেয়ে বড় শক্তি।
 
কবি কবিতা সম্পর্কে বলেন
 
আমাদের সমাজকে স্বচ্ছ রাখতে কবিদের সংখ্যা বৃদ্ধি হওয়া প্রয়োজন
 
কবিরা সবসময় আধুনিক ও চিরকাল আধুনিকতার প্রবক্তা হিসেবে পরিচিত। আমি সবসময় কবিতাকে ভালোবাসি। কবিতার ভেতর দিয়ে দেখি। আমাদের সমাজকে স্বচ্ছ রাখতে কবিদের সংখ্যা বৃদ্ধি হওয়া প্রয়োজন। কবিরাই পারে সমাজের সব অনিয়ম দূর করতে। কবিতা মানুষকে আধুনিক ও প্রগতিশীল হতে শেখায়। কবিতা মানুষকে বিদ্রোহী করে তোলে। কবিতার দিকে তাকিয়ে একটি সমাজের অবস্থা বোঝা যায়। কবিতা আমাদের জীবনের কথা বলে। স্বাধীনতার কথা বলে। মুক্তির কথা বলে। বিশ্বব্যাপী হত্যাযজ্ঞ, যুদ্ধ, পারমাণবিক হুমকির সময় সর্বদাই সাহস যুগিয়েছে কবিতা।
কবিতাকে আমরা ঠিক যতো সহজ মনে করি, ততো সহজ নয়; কবিতা হচ্ছে একটি জটিল শিল্প। এই জটিলতার মধ্যে রয়েছে অনন্য আনন্দ উচ্ছ¡াস। কবিতা নির্মাণের জন্য প্রয়োজন মানুষের ভালোবাসা। মানুষকে ভালোবাসতে হবে। মানুষের ভালোবাসার মধ্যে বাঁচতে হবে। আমি কবিতা নিয়ে সারা জীবন চিন্তা করেছি। কবিতার মূলে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছি। কবিতাকে আয়ত্ত করার চেষ্টা করেছি। কবির কাজ হলো জাতিকে স্বপ্ন দেখানো। স্বপ্নের মাধ্যমে আনন্দ ও উচ্ছ¡াস ছড়িয়ে দেয়া। স্বপ্ন দেখা একান্ত প্রয়োজন। স্বপ্ন ছাড়া মানুষের জীবন সার্থক হয় না।
 
ছান্দসিক কবি আবদুল কাদিরের সাথে সম্পর্ক কেমন ছিলো।
 
ছন্দ বিষয়ক তার গভীর জ্ঞান আমাদের জন্য শিক্ষনীয়।
কবি আবদুল কাদিরের শ্রেষ্ঠ অবদান হলো কাব্য মালঞ্চ নামের বাংলার মুসলমান কবিদের একটি বৃহৎ সংকলন সম্পাদনা। বাল্যকাল থেকেই আমার সে ভাগ্য হয়েছিলো ছান্দসিক কবি আবদুল কাদিরের সাথে পরিচিত হবার। আমি তাঁর ¯েœহসিক্ত ছিলাম। তিনি আমার সমালোচনাও করেছেন। তাঁর ছন্দ বিষয়ক গভীর জ্ঞান আমাদের জন্য শিক্ষনীয় বিষয়। সাহিত্যে তাঁর অবদান অতুলনীয়।
 
কাজী নজরুল ইসলাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আর ঐ সময়ের বাঙালী মুসলামান সম্পর্কে কিছু বলবেন।
 
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম প্রেম-প্রকৃতি, দেশ, দেশের মানুষ ও বিশ্ব চেতনার কবি
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের আর্বিভাব এক অসাধারণ ঘটনা। কখনো মনে হয় না এটা সাধারণ ঘটনা ছিলো না। কারণ যেখানে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর প্রতিভা এবং প্রজ্জ্বলভাষা নিয়ে দিক থেকে দিগন্ত পর্যন্ত দখল করে ছিলেন তখন কাজী নজরুল ইসলাম সেই বাতাবরণ বিদীর্ণ করে এক নতুন ভাষার জন্ম দিলেন যা আদ্য বাংলাসাহিত্যে লিখিত হয় নি। মনে হয় যেনো সত্যিই আমাদের সাহিত্যে ধুমকেতুর আর্বিভাব হয়ে ছিলো। কাজী নজরুল ইসলাম বাংলা ভাষায় অপরিসীম ক্ষমতা এবং সমভাষা বাঙ্গালী জাতি তথা বাঙলী মুসলমানদের মুখের ভাষা অবলীলায় তুলে ধরতে পেরেছিলেন। তাঁর আর্বিভাব না হলে বাংলাভাষা অসমপূর্ণ এবং সমগ্র জাতির জন্য নতুন সাহিত্য সৃষ্টিতে সহায়ক হতো না। বাংলা ভাষায় একটি মুসলমানী রূপ আছে এ-ব্যপারে তিনি রবীন্দ্রনাথর সাথেও আপোষ করেননি। তিনি তাঁর কবিতায় সবগুলো বন্ধ দরজার তালা একটি মাত্র কবিতায় খুলে ফেলে ছিলেন। তার নাম হলো বিদ্রোহী কবিতা। সাহিত্য যে অসা¤প্রদায়িক, কেবল মানুষের হৃদয়ের নির্জাস হবে তা তিনি বুঝতে পেরে ছিলেন। তা কাজী সাহেব গানের মাধ্যমে তুলে ধরে ছিলেন। বাংলা  গানের বাণীতে বিপ্লব সৃষ্টি করেছিলেন। তিনি ছিলেন বৃটিশবিরোধী একমাত্র সাম্রাজ্যবিরোধী কবি। এ পর্যন্ত বাংল া ভাষায় সাম্রাজ্য আর কোনো কবির জন্ম হয়নি। তিনি প্রেম-প্রকৃতি, দেশ-দেশের মানুষ ও বিশ্ব চেতনার কবি। কাজী নজরুল ইসলাম ছিলেন বাংলা ভাষার চির তারুণ্য এবং কবিত্বশক্তির আধার স্বরূপ। তাঁর আবির্ভাবের পর বাংলা ভাষার সম্ভাবনার সমস্ত দরজা খুঁলে গিয়েছিল। তিনি কাব্যে গানে এবং উপনিবেশ বিরোধী বক্তব্যে বাঙালী জাতিকে উদ্বুদ্ধ করে তুলেছিলেন। বিশেষ করে সমসমায়ীক মুসলিম ও হিন্দু তরুণ যুবার তার লেখায় উদ্বুদ্ধ হয়ে স্বাধীকার আন্দোলনের দিকে ধাবিত হয়। তিনি হিন্দু মুসলমান সম্পৃতির অগ্রদূত। তার আগমন না ঘটলে বাংলা কবিতায় যে একটা মুসলমানি রূপ আছে তা প্রদর্শনের কোনো সুযোগ সৃষ্টি হতো না।
 
ভাষার মুক্তি ও নজরুল সংগীত সম্পর্কে আপনার বয়ান জানতে চাই।
 
বিভেদের সব প্রাচীর ভাঙ্গতে গণতন্ত্রের ঔদার্যে বিভ‚ষিত হতে নজরুলের কাব্য-সাহিত্য ও সংগীত আজ বিশ্বের প্রতিটি জাতির কাম্য
জাতীয় ও চির বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের পাঠে আমার মধ্যে এ-উপলব্ধি জাগিয়েছে যে, তাঁর কবিতা বাংলা কবিতার সমস্ত সিমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করে বাংলাভাষায় এক সীমাহীন সম্ভাবনাকে উন্মোচন করেছে। তাঁর আবির্ভাব না ঘটলে কল্লোল-কাল ও পরবর্তী ত্রিশের কবিরা রবীন্দ্র প্রভাব বীদির্ণ করে বেরিয়ে আসতে পারতো না।
কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর গানেও বিপ্লব সৃষ্টি করেছিলেন। তাঁর সংগীত প্রতিভা এবং গানের বাণী ছিল গভীর-অন্তর-দৃষ্টি সম্পন্ন। আধুনিক বাংলা গানের চরিত্র বদলে দিয়েছিলেন। তিনি রাগ প্রধান গানেও গভীর প্রতিভার পরিচয় দিয়ে গেছেন। কবিতা ও গানে কাজী নজরুল ইসলাম আবির্ভাব হওয়ায় যেন ধুমকেতুরই আবির্ভাব হয়েছিল। তাঁর কাব্য ও গানের প্রভাব সচেতন বা অবচেতনভাবে বাংলা ভাষাভাষী আধুনিক কবি-সাহিত্যকদের মনে-প্রাণে অসাধারণ প্রভাব সৃষ্টি করে আছে। তিনি বিভেদের সব প্রাচীর ভাঙ্গতে গণতন্ত্রের ঔদার্যে বিভ‚ষিত হতে নজরুলের কাব্যÑসাহিত্য ও সংগীত আজ বিশ্বের প্রতিটি জাতির কাম্য
 
একজন কবি কিভাবে ইসলামকে গ্রহণ করেন।
 
ইসলামই হলো মুক্তির একমাত্র উপায়
আমি একজন কবি হতে চেয়েছি। আমি একজন কবি ছাড়া আর কিছুই নই। আমি মনে করি যে, আমি নিজের চেষ্টায় প্রকৃত মুক্তির পথ খুঁজে পেয়েছি। ইসলামই হলো মুক্তির একমাত্র উপায়। যে ভাবেই দেখুন আমার একটি বিশ্বাস আছে। আমি জেনে বুঝেই ইসলামকে গ্রহণ করেছি। আমি গর্বিত ও বিজয়ী মানুষ। যে লোক জেনে যায় মৃত্যুর পর ফয়সালা হবে, তার কোনো ভয় থাকতে পারে না। তার সবচেয়ে বড় অর্জন মহান আল্লাহর সুন্তুষ্টি।
 
ধর্ম ও সংস্কৃতির মেল বন্ধনের ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া রাজনীতি সম্পর্কে বলুন।
 
সংস্কৃতির উৎস থেকে ধর্মকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা চলছে।
সংস্কৃতির উৎস থেকে ধর্মকে সরিয়ে দেয়ার একটা চেষ্টা চলছে। আমি এর ঘোর বিরোধীতা করি। আমি মনে করি, এই প্রয়াস আত্মাহীন। এই প্রয়াস কখনোই সফল হতে পারে না। বাংলাদেশে ইসলামি সংস্কৃতির যে ধারাটি ক্ষীণ হয়ে উঠেছিলো, আমি জানি, সেটি এখন প্রবল হয়েছে। আমি চাই এর একটা তুফান, এর একটা প্লাবন তৈরি হোক। এ দেশে প্রতিদিন লাখ লাখ মসজিদ থেকে পাঁচ ওয়াক্ত আজান ছড়িয়ে দেয়া হয়। যারা বাঙলি সংস্কৃতির কথা বলে, তারা কি পারবে এসব মসজিদের আজান বন্ধ করে দিতে। যাদেরকে তারা প্রতিক্রিয়াশীল বলে মূলত তারাই প্রগতিশীল। আর যারা নিজেদের প্রগতিশীল বলে দাবি করে তারাই হচ্ছে প্রকৃত পক্ষে প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী।
 
ইসলাম ও পহেলা বৈশাখের সংস্কৃতি কি রূপ হবে
 
জীবনে জীবন যোগ করতে হয় নইলে কৃত্রিম পণ্যে ব্যর্থ হয় জীবনের পসরা
আমরা মুসলমান, আর তাই ইসলামের পক্ষে আমাদের লড়াই করতে হয়। বিশেষ করে যারা বৈরী, যারা আমাদের শত্রু তাদেরকে দাওয়াত দিতে হবে। আল্লাহর দিকে দাওয়াত তো মুসলমানদেরই দিতে হবে। আর তার জন্য আমাদের জ্ঞান অর্জন করতে হবে, অর্জন করতে হবে বাক চাতুর্য্য, বাকশৈলী- পহেলা বৈশাখে আমাদের সেই শপথ নিতে হবে। এখন চলছে নকল কৃত্রিম সংস্কৃতির জামানা। এই থেকে বাইরে আসতে হবে। জীবনে জীবন যোগ করতে হয়। নইলে কৃত্রিম পণ্যে ব্যর্থ হয় জীবরে পসরা। কৃত্রিশ পণ্যে জীবন থেকে মৌলিক জীবনে আসতে হবে। ইসলাম হলো মৌলিক জীবনের ধর্ম এবং ইসলাম একটি সর্বজনীন ধর্ম। ইসলামকে প্রতিরোধ করার ক্ষমতা কারো নাই। তবে মুসলমানদেরকে প্রচুর লেখা পড়া করে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। জ্ঞান না থাকলে বিপরীত চক্রকে পরাস্ত করা সম্ভব নয়।
 
পন্ডিত সৈয়দ আলী আহসান কাব্যরস আমাদের কিভাবে প্রেরণা যোগায়
 
যে-সাহস কবিকে সর্বাবস্থায় উপমা বয়নে শক্তি যোগায় আমাদের দেশে সৈয়দ আলী আহসান তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে বৈচিত্র্যের অধিকারী।
সৈয়দ আলী আহসানের কবিতা হলো শব্দের প্রচলিত অর্থের অতিরিক্ত একটি ব্যাপার আর শব্দাতিরিক্ত অনুভূতির নির্যাসই হলো তাঁর কবিতা। চিত্রকলার ব্যাখ্যায় আলোছায়ার উপযোগিতা যেমন রঙের ঘনত্বের কম-বেশিতে যেমন চিত্রকলার পটভ‚মিটি কম্পিত হতে থাকে, ঠিক এ-ধরনের কাব্যবিচারই তিনি সংযোজন করলেন আমাদের সাহিত্যে। কবিতার অন্তর্গত সৌন্দর্য সৈয়দ আলী আহসানের মতো আর কেউ আমার কাছে, আমার বন্ধুদের কাছে উদঘাটন করেছেন বলে জানা নেই। যে-সাহস কবিকে সর্বাবস্থায় উপমা বয়নে শক্তি যোগায় আমাদের দেশে সৈয়দ আলী আহসান তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে বৈচিত্র্যের অধিকারী। যে-বার্ধক্য তারুণ্যকে উজ্জীবিত করে- তাঁর জীবনে, তাঁর কবিতায় ও বক্তৃতায় আমরা তা আস্বাদন করে ধন্য মেনেছি।
 
বাংলা ভাষা ও আমাদের মাতৃভাষা মর্যাদা বিষয়টি কেমন হতে পারে
 
মুসলমানরা যেসব দেশে বসবাস করে সেসব দেশের স্থানীয় ভাষাকে তারা নিজেদের শ্রেষ্ঠ ভাষা হিসেবে গ্রহণ করেছেন
বাংলা ভাষার মর্যাদার দাবীতে প্রথম আন্দোলন শুরু করেন কয়েকজন মুসলিম তরুণ। মুসলমানরা যেসব দেশে বসবাস করে সেসব দেশের স্থানীয় ভাষাকে তারা নিজেদের শ্রেষ্ঠ ভাষা হিসেবে গ্রহণ করেছেন। ভাষা ছাড়া মানুষের চলে না। আমরা যেনো কখনো ভুলে না যাই যে, আমরা মুসলমান। কারণ সংস্কৃতিটা প্রায় সবটাই নির্ভর করে ধর্মাচারে।
 
কি আছে কবি ফররুখ আহমদের কবিতায় যার জন্য তাকে আমরা স্মরণ করবো।
 
ফররুখ আহমদের কবিতায় বাংলার মানুষের ঐতিহ্য ও ধর্ম অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত
ফররুখ আহমদ প্রতিবাদী মানুষ ছিলেন। অন্যায়-জুলুমের বিরুদ্ধে সবসময় কবিতার মাধ্যমে তিনি প্রতিবাদের ভাষা উচ্চারণ করেছেন। ফররুখ আহমদ বাংলা ভাষার একজন মৌলিক কবি। সারাজীবন অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে কাব্যচর্চা করেছেন। তাঁর সাত সাগরের মাঝি কবিতা থেকে দিলরুবা পর্যন্ত তাঁর অসাধারণ প্রতিভার পরিচয় পাওয়া যায়, তাতে অনুমিত হয় যে, তিনি একটি সতন্ত্র কাব্যধারার প্রয়াসী ছিলেন। তাঁর কবিতায় বাংলার মানুষের ঐতিহ্য ও ধর্ম অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। তিনি নতুন কাব্যস্বাদ আবিষ্কার করেছেন। আমরা তা পাঠ করে- তাঁর পরবর্তী কবিকুল- নিজেদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছি।
 
আপনার কাছে ফররুখ কাব্যের বিচার বিশ্লেষণ
 
ফররুখ আহমদ নিঃসন্দেহে তাঁর কালের ভাষা ও কাব্যের প্রধান পুরুষ ছিলেন
কবি ফররুখ আহমদ অতন্ত নিষ্ঠাবান আধুনিক কবি। ৪০-এর দশকে তিনি কবিতায় ঐতিহ্যগত নানা বিষয় উত্থাপন করে নিজের বিশিষ্টতা অর্জন করেন। তাঁর কাব্যে ইসলমকে আদর্শ হিসেবে ব্যবহার করায় যে রোমান্টিক প্রবণতা ধরাপড়ে তা যেকোন পাঠককেই শিহরিত এবং উজ্জিবিত করবে। তিনি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ বাংলাদেশের ১৩৫০ এর দুর্ভিক্ষ, সামাজিক অবক্ষয় এবং মানবজাতির রোদনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী ভাষা উচ্চারণ করতে অকুতভয় ছিলেন। নিঃসন্দেহে তাঁর কালের ভাষা ও কাব্যের প্রধান পুরুষ ছিলেন। তিনি ছন্দে-গন্ধে, বর্ণনায় সার্থক কবিত্বশিক্তির পরিচয় দিয়ে গেছেন। আমরা তার মৃত্যুতে গভীরভাবে শোকাগ্রস্থ হয়ে পরেছিলাম, আমি তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করি।
বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস স্বীকৃত একজন অসাধারণ জননন্দিত কবি ফররুখ আহমেদ। বাংলার মুসলমানের নয়নমনি মানবতাবাদী এই মহান কবি শত দুঃখ কষ্ট সত্তে¡ও কখনো অন্যায় ও অপসংস্কৃতিতে আপোস করেননি। তাই সকল সাংস্কৃতিক কর্মীকে দেশীয় সুস্থ্য সংস্কৃতির প্রবৃদ্ধি বজায় ও অপসংস্কৃতি রোধে অগ্রণী ভ‚মিকা পালন করতে হবে।
 
আমরা কেনো ফররুখ আহমদ পাঠ করবো।
 
ফররুখের কাব্যবিশ্বাস আমাদের আলোকবর্তিকা
ফররুখ আহমদের কাব্যবিশ্বাস আমাদের জন্য আলোকবর্তিকা। তিনি ছিলেন এক স্বতন্ত্র কবি প্রতিভা। আমাদের নিজস্ব সাহিত্যভাষা ও কাব্যভাষায় তাঁর প্রতিটি কাব্যগ্রন্থ এবং সাহিত্য আমাদের এগিয়ে নিয়ে গেছে। ফররুখ আহমদ যতোদিন বেঁচে ছিলেন কখনো পরাজয় স্বীকার করেননি। তাঁর ‘সাত সাগরের মাঝি’ তাঁর কালের একটি সর্বাধুনিক কবিতার দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। তাঁর ‘হাতেম তায়ী’ কাহিনী কবিতার মর্যাদা লাভ করেছে। তাঁর কবিতা এখনো চিন্তাশীল কাব্য-রসিকদের নিত্য পাঠ্য হিসেবে বিবেচিত হয়।
 
আপনার পাঠে ফররুখ কাব্যে আধ্যাত্মিকতা জানতে চাই।
 
ফররুখ আহমদ বাংলাসাহিত্যের আধ্যাত্মিক দর্পন
ফররুখ আহমদ শুধু স্বতন্ত্র ধরণের স্বাধীন প্রতিভাই নন, তার শিল্প-শৈলীও অত্যন্ত দুরূহ। অন্য কেউই তাঁকে অনুসরণ করতে পারেননি। তাঁর কবিতার লাবণ্য সমকালকে মোহগ্রস্থ করে তুলেছিলো। ফররুখের কবিতা আমাদের সাহিত্যের আধ্যাত্মিক দর্পন। তার এই আয়নায় আমরা নিজেদের মুখ দেখে গর্ববোধ করি।
 
মুক্তিযুদ্ধ ও ধর্ম সম্পর্কে বিতর্কের অবসান কিভাবে হতে পারে
 
মুক্তিযুদ্ধকে ধর্মের বিপক্ষে এবং ধর্মকে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে দাড় করা যাবে না
মুক্তিযুদ্ধ করেছিল এদেশের তারুণ-যুবারা, যারা কোন রাজনীতি বুঝত না আর রাজনীতিকগণ আশ্রয় নিয়েছিলেন প্রতিবেশী দেশে। এখানে ধর্মীয় কোনো যুদ্ধ হয়নি। তাই আমাদের বুঝতে হবে জানতে হবে। যুদ্ধ কেনো হয়েছিলো। মুক্তিযুদ্ধকে ধর্মের বিপক্ষে এবং ধর্মকে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে দাড় করা যাবে না। আর এভাবেই আমরা মুক্তির পথ খুঁজতে পারি।
 
কারা মুক্তিযুদ্ধ করে ছিলো কেনো যুদ্ধ করে ছিলো।
 
মুক্তিযুদ্ধ ছিলো প্রকৃত অর্থে ন্যায়যুদ্ধ যে যুদ্ধে বিজয়ী হয়েছিলো আক্রান্ত জনগোষ্ঠী
কোনো রাজনৈতিক দল কি মুক্তিযুদ্ধ করেছিলো? না। কোনো দল বা ব্যাক্তির নাম উলে­খ না করেই বলি, আমি তাদের কলকাতায় দেখেছি। যুদ্ধক্ষেত্রে নয়। তবে কারা যুদ্ধ করেছিলো? যুদ্ধ করেছে এদেশের তরুণ-যুবারা, সাধারণ মানুষ, যাদের কোনো রাজনৈতিক মোটিভেশন ছিলো না। হানাদার বাহিনী যখন নিরীহ মানুষের ঘরবাড়ি, গ্রামের পর গ্রাম পুড়িয়ে দেয়, তখন বিদ্রোহী হয়ে ওঠে এদেশের সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। লুঙ্গি গামছা পরা এসব মানুষ দলে দলে অস্ত্র হাতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল মুক্তিযুদ্ধে। আর এই মুক্তিযুদ্ধ ছিলো প্রকৃত অর্থে ন্যায়যুদ্ধ, যে যুদ্ধে বিজয়ী হয়েছিলো আক্রান্ত জনগোষ্ঠী। যুদ্ধ যখন চরম আকার ধারণ করে তখন ভারতীয় সৈন্যরা নিজেদের স্বার্থে এগিয়ে আসে।
আমাদের বিরুদ্ধে এখন অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও বাজার দখলের ষড়যন্ত্র চলছে। শোষকের অর্থনৈতিক শোষণ থেকে মুক্তির জন্য এদেশ স্বাধীন হয়েছে। কিন্তু এখনও আমাদের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে চলছে বহুমুখি ষড়যন্ত্র। আমাদের বিরুদ্ধে এখন যে ষড়যন্ত্র তাহলো অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও বাজার দখলের ষড়যন্ত্র।
 
আপনি তো মুক্তিযোদ্ধা বিজয় দিবসে আপনি দেশ নিয়ে কি চিন্তাভাবনা করেন।
 
বাংলাদেশের পেটের ভিতরে কি আছে, আমরা জানি না এটা না জানলে নিজের অস্তিত্ব রক্ষা করা সম্ভব না
আমরা একটা দিন পেয়েছি সেটা হলো বিজয় দিবস; আর কিছু নয়, আর কিছু না। কিন্তু এর জন্য আফসোস করে লাভ নেই। শুধু মনে রাখতে হবে, এই দিবসটি এমনি এমনি আসেনি। এর জন্য অনেকের অনেক ত্যাগ রয়েছে। দৃশ্যমান মানচিত্রের বাইরেও আমাদের দেশের একটি অন্তরবর্তী মানচিত্র আছে। সে মানচিত্রের কথা আমরা না জানলেও পৃথিবীর লোভী শকুনরা ঠিকই জানে। তারা আমাদের সেই গোপন মানচিত্রে হানা দেয়ার জন্য ওঁৎ পেতে আছে। বাংলাদেশের পেটের ভিতরে কি আছে, আমরা জানি না। এই না জানাটা আমাদের অপরাধ। এটা না জানলে নিজের অস্তিত্ব রক্ষা করা সম্ভব না।
মহান বিজয় দিবসে আমাদের সকলকে পরস্পর ভেদাভেদ ভুলে এক প্লাটফর্মে দাঁড়াতে হবে। তবেই প্রোগ্রেস হবে বাংলাদেশের, আমি সেই প্রোগ্রেসিব বাংলাদেশের সদস্য। অনেকেই বাংলাদেশকে তার প্রোগ্রেসিব অবস্থান থেকে বিচ্যুতি করার জন্য কাজ করছে কিন্তু তারা সফল হতে পারবে না। আমরা সাধারণ জনগণ একটি অবস্থানে নিয়ে যাবো আমাদের প্রিয় বাংলাদেশকে।
 
মুক্তিযুদ্ধের ৪২ বছরেও আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস দ্বিধাবিভক্ত।
 
আমাদের ইতিহাস সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ হয়নি
বাংলার হাজার বছরের ইতিহাস থাকলেও আমাদের ইতিহাস সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ হয়নি। বার বারই কায়েমি স্বার্থবাদীরা নিজেদের উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য ইতিহাসকে বিকৃত করেছে। নিজেদের মতো করে একটি ইতিহাস চাপিয়ে দিয়েছে জাতির ঘাড়ের ওপর। পৃথিবীর সকল স্বাধীনতার ইতিহাস রক্ত দিয়ে লেখা। স্বাধীনতার এই ৪২ বছর পরেও আমাদের প্রাপ্তির ইতিহাস নিয়ে বসতে হয়েছে। আমাদের অর্জন অনেক। আমি স্বাপ্নবাদী আমি দেশের মানুষকে স্বপ্ন দেখিয়ে যাচ্ছি।
 
আমাদের স্বাধীনতা স্বাবভৌমত্ব কি টিকে থাকবে?
 
মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে বিজয় অর্জিত হয়েছে সে বিজয় অবশ্যই অক্ষুণ্ন থাকবে
স্বাধীনতার জন্য এদেশের মানুষ যে ত্যাগ স্বীকার করেছে তা বৃথা যাওয়ার নয়। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে যে বিজয় অর্জিত হয়েছে সে বিজয় অবশ্যই অক্ষèন থাকবে। আমরা স্বাধীনতার যুদ্ধে জয়ী হয়েছি। এখন গণতন্ত্র ও অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রামে জয়ী হব ইনশাআল্লাহ। মুক্তিযুদ্ধে জয়ী হয়েছি, ভবিষ্যতেও জয়ী হব এবং জয়ী থাকব।
 
আপনার স্নেহধন্য কবি মতিউর রহমান মল্লিক সম্পর্কে কিছু বলেন।
 
মতিউর রহমান মল্লিক ছিলেন দ্যুতি ছড়ানো হিরক খন্ড
মতিউর রহমান মল্লিক ছিলেন অর্ন্তমুখি কবি। বাংলাদেশের সাহিত্যাঙ্গণে এই কবির কাব্যসৃজন আমাদের জাতীয় সম্পদ। আস্থা ও বিশ্বাসের নির্যাসে তৈরি তার কবিতা, সাহিত্য এবং সাংস্কৃতিক বলয়, যা আমাদের সমাজকে করেছে সুন্দর ও পরিমার্জিত। সেই পরিমার্জিত সুন্দর সাহিত্য সমাজে কবি মতিউর রহমান মল্লিক ছিলেন দ্যুতি ছড়ানো এক হিরক খন্ড।
মল্লিক ছিলেন এক ক্ষণজন্মা দেশপ্রেমিক আধ্যাত্মিক দরবেশ। আজীবন এই কবি তার আদর্শ, দেশ ও মানুষের জন্য উৎসর্গ করে গেছেন। তাই মলি­ক আমাদের জন্য আদর্শ, অনুপ্রেরণা ও বাতিঘর। তিনি আরো বলেন, কবি মল্লিক ছিলেন একটি হিরকখন্ড। আর সেই হিরক খন্ড থেকে দ্যুতি ছড়িয়ে গেছেন গোটা দেশ এবং পৃথিবীতে। তার সাংগঠনিক দক্ষতা, সৃজনশীল কর্মস্পৃহা জাতীকে একটি সুন্দর সুশৃঙ্খল সমাজ নির্মাণে সহায়তা করেছে এবং করবে।
 
তারুণ্য সম্পর্কে আপনার বয়ান।
 
চৌকস মেধাবী তরুণরাই আকাশ ছোঁয়া দেশ ও জাতি গড়ার স্বপ্ন দেখায়
আজকের মেধাবীরাই আগামী দিনের দেশ ও জাতি গড়ার কারিগর। তাদের ওপরই নির্ভর  করছে এ দেশের ভবিষৎ। আমরা যারা কবি তারা মানুষের মনে প্রেম, ভালোবাসা আর স্বপ্ন দেখাই আর মেধাবীরা দেশ ও জাতি গঠনে আন্তরিকতার সাথে সহযোগিতা করে। তরুণদেই এদেশের হাল ধরতে হবে। দেশ ও জাতিকে নিয়ে যেতে হবে অনেক দূরে। মেধাবী ও কবিদের কাজ হলো মানুষের মাঝে আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখানো।
 
আপনার স্নেহধন্য কবি কথাশিল্পী সোলায়মান আহসন সম্পর্কে কিছু বলেন।
 
সোলায়মান আহসানের কবিতায় একটা আদর্শের সতর্কতা আছে
সোলায়মান আহসান তার কবিতায় একটি স্বাধীনতা সৃষ্টি করেছেন। তার কবিতা অত্যন্ত স্বচ্ছ। তার কবিতায় একটা সতর্কতা আছে, এই সতর্কতা হলো আদর্শের সতর্কতা। সোলায়মান আহসানের গদ্যসাহিত্যের চেয়েও কাব্যক্ষমতা বেশি, তার উচিৎ কবিতাকে প্রবলভাবে ধারণ করা এবং ক্রমাগত কবিতার চর্চা করা।
 
আমাদের মাতৃভাষা ভালোবাসা সম্পর্কে জানতে চাই।
 
যারা ভাষাকে ভালোবাসেন তারাই সাহিত্য চর্চা করেন
ভাষার প্রতি সম্মান দেখানো প্রতিটি জাতির পবিত্র দায়িত্ব। যারা মাতৃভাষাকে অবজ্ঞা করেন তারা কখনো শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করতে পারেন না। বাংলা আমার মর্মে গাঁথা। বাংলা ছাড়া অন্য কোনো ভাষায় কিছু রচনা করতে পারি না। যারা ভাষাকে ভালোবাসেন তারাই সাহিত্য চর্চা করেন এবং সাহিত্য পাঠ করে আনন্দ লাভ করেন। সাহিত্য সত্য ও সুন্দরের পথ দেখায় আনন্দ দেয়, মানুষকে সমৃদ্ধ করে।
 
সাংস্কৃতিক পরাজয় কি ভাবে হবে।
 
কেউ যখন নিজের সংস্কৃতি ছেড়ে ভীনদেশী সংস্কৃতিতে বিশ্বাসী হয়ে ওঠে তখনই শুরু হয় তার পতন
আমাদের সংস্কৃতি আমরাই প্রবৃদ্ধি করেছি, কেউ জোর করে অন্য সংস্কৃতি চাপিয়ে দিতে পারে না। নিশ্চয়ই প্রত্যেকেরই নিজস্ব সংস্কৃতি আছে। তারা নিজেরা তাদের সংস্কৃতিচর্চা করবে এটাই স্বাভাবিক। কেউ জোর করে কারো সংস্কৃতিকে আমাদের উপর চাপিয়ে দিতে পারবে না যতোক্ষণ না আমরা তা গ্রহণ করবো। কিন্তু কেউ যখন নিজের সংস্কৃতি ছেড়ে ভীনদেশী সংস্কৃতিতে বিশ্বাসী হয়ে ওঠে তখনই শুরু হয় তার পতনের।

সাময়িকী ।। ১ম সংখ্যা ।। ১ জুলাই ৩০২৩ ।। বিষয় : আল মাহমুদ 


বখতিয়ারের ঘোড়া ।। আল মাহমুদ ।। ১ম সংখ্যা ।। সাময়িকী

জীবনে জীবন যোগ করতে হয় নইলে কৃত্রিম পণ্যে ব্যর্থ হয় জীবনের পসরা ।। আল মাহমুদ ।। সাময়িকী

পানকৌড়ির রক্ত ।। আল মাহমুদ ।। ১ম সংখ্যা ।। সাময়িকী




No comments

Powered by Blogger.