নাদ ।। মৃগাঙ্ক শঙ্কর পোদ্দার

 
নাদ
মৃগাঙ্ক শঙ্কর পোদ্দার

দীর্ঘ এ’ রাত-
জেগে আছে চোখ দুটি আজ, ভাটার মতো
জ্বলজ্বলে ভারি
নিশুতির সাথে কাটে রাত
পোড়া কাঠের খড়ি হাতে, আঁধারেতে আঁকিবুকি কাটি
এইটুকু কাজ!
অন্ধকারের বুকে কালো এক প্রকাণ্ড পাণ্ডুলিপি
কে-ই বা পড়ে?
আমি পড়ি
প্রবেশ নিষেধ এই শ্মশানের পুরে
এখানে কেও আসেনা
কাল প্যাঁচা ডাকে
শব সব শুয়ে রয়
প্রতিটি মৃতের মুখে আমিই জল দিই
শান্তি! শান্তি! শান্তি!
জ্বালাই চিতা
সারা রাত জাগা রাত আমি সেই এক ভাবে-
চেয়ে আছি নিকষ সে কালো রাতে
অপেক্ষা?
বুঝিনা। শুধু চেয়ে থাকা টুকু আছে
জানি আমি-
সব চাওয়া ‘চাওয়া’ শুধু নয়
পাওয়া সে ত’ ‘পাওয়া’ তবু নয়
ক্রন্দন নেই কিছু হারানোর তরে
কিচ্ছুটি নেই এ বুকে!
শ্বাসের চিকন পরশ টুকু পাই
হৃদি মাঝে তবু যে হুঙ্কার বাজে-
সে যে সওয়া দায়!
ঝিঁঝিঁর ডাকের মত রাবণের চিতা-
গন্গনে তাপ-
প্রবল নাদের হুঙ্কার
আমায় পাগল যে করে
তার সাথে আছি বেশ
এই ভেতরের আমার যে ‘আমি’ তার সাথে-
হয়ত বা মিল আছে তার, তাই ডাক পড়ে দিন রাত।
বিরাম বিহিন সে!
শুধু শুনি
শুনে যাই
ভালো লাগে ব’লে
যদি ভাবি মিথ্যা সে!
জানি চলে যাবে সে আমায় ছেড়ে-
তাই শ্মশানের পুরে একা থাকি জেগে
সেই ডাক শুনি
কেও সেটা জানে নিশ্চিত
‘আমি’ তা জানে?
জানে
তাই তার খেদ নেই, লাভ নেই, ক্ষতি নেই কোনো
খোঁজ কত নিখোঁজ হয় সব অসময়ে
পৃথিবীর সে আকাশ- আছে বৃষ্টি, কৃষ্টি তো আছেই
প্রকৃতির নিজেরটা সবারে দিয়েছে ভ’রে
আমি কোথা ছিনু?
আমার যে আছে এক মেঘ-হারা বুক!
বৃষ্টি যে ঝরে না সেখানে
ভুলেও সে ডাক ডুকরে ওঠে না
স্নেহের অতল থেকে
কেনো?
আনন্দ ধারার পাশে
অতীব হরষে
কেও গায়না যে গান-
এই খানে, এই পুরীতে আমার
তবু ফুটুক তারা
এই ছোট্টটি চাওয়া-
মন ভালো করে হাসুক সে চাঁদ আমার-
চিত্ত আকাশে-
অতি সুখ-বাসে
আমার সে আকাশের তলে
চির নীল ঘন, অসীম যাপন-
আমি মোর একান্ত আপন।

No comments

Powered by Blogger.